বুধবার ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পঞ্চাশের নারী ।। আফরোজা রানা

আফরোজা রানা   |   শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | প্রিন্ট

পঞ্চাশের নারী ।। আফরোজা রানা

পঞ্চাশের নারী - আফরোজা রানা

পঞ্চাশের নারী

আফরোজা রানা


পঞ্চাশ বছর বয়সী কোনো নারী যখনি কোন কারিকুলাম দেখতে যায়,
তখনী সমাজ বলে।
কি সাহস রে বাবা মহিলার বয়সটা যে পঞ্চাশে ছুঁয়েছেন সে দিকে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,এমন ভাব দেখায় বিশ বছরের যুবতী।
চলন বলনে যে হাবভাব মনে হয় উনি এখনো টিনেজ,
হৈ চৈ গান বাজনা ডান্স উঁঃ লজ্জায় মাথা কাটা যায়।

হ্যাঁ আপনারা বলুন যেত খুশি বলুন
এসব শুনে গায়ে সয়ে গেছে বুঝলেন।
কি হয়েছে পঞ্চাশ হয়েছে,পঞ্চাশ হয়েছে বলে একটা ছাপা সুতির শাড়ী পরে ঘরের কোনে পান চিবোতে হবে।


সারা জীবন মেয়েদের খালি এটা করা যাবেনা, ওটা করা যাবেনা,এখনে যাওয়া যাবেনা,ওখানে যাওয়া নিষেধ।
যখন ষোলোই হয় ছেলে বন্ধু তো দুরের কথা মেয়ে বন্ধুর সাথেও কথা বলার অনুমতি দেওয়া হয়না,আবার বন্ধুর বাড়ী যাওয়া?? কোন কারণে অনুমতি পেলেও যেতে হয় মা অথবা ভাই বোন কে সাথে নিয়ে।
আর ঘোরাফেরা,সিনেমা,পিকনিক এ সব ছিলো অলীক কল্পনা।

তারপর যখন কুড়ি হয় শুরু হয় কুড়িতে বুড়ি বিয়ে দাও।
হয়ে গেলো বিয়ে লাল টুকটুকে বেনারসি শাড়ি পরে বউ সেজে শ্বশুর বাড়ী পদার্পণ। নতুন জীবন নতুন জগৎ।
সেখানেও আবার এমন নজরদারি???
হাঁটতে উঠতে বসতে শ্বশুর শাশুড়ির কটু কথা,নদন দেবরের কথায় কথায়
সব বিষয়ে নাকগলানো কি আর বলার।
এটা কেন খাবেনা,হাতে কেন বড় বড় নখ রেখবে,মাথায় ঘোমটা নাই কেন,কারো সাথে হাসিহাসি করা যাবেনা,মেয়ে মানুষের এত হৈচৈ কিসের ইত্যাদি ইত্যাদি।
আর বাহিরে গেলেতো কথাই নাই,কৈফিয়ত কৈফিয়ত আর কৈফিয়ত।
তারপর জীবনে আরেক পরিবর্তন,মা হওয়া??বাচ্চাদের লালন পালন করতে করতে কবে যে নিজের সখ সখিনতার বিসর্জন দেওয়া হয়, টেরি পাওয়া যায়না,এজন্য কোন আপসোস নাই,এটাতো সব মায়েরি কর্তব্য।
এভাবে আরো তিরিশ বছর কেটে যায়।ছেলে মেয়ের পড়া লেখা, বিয়ে, ঘর-সংসার। ওদের ঘর সংসার নিজের হাতে তৈরি করে দেওয়া,এখন ওরা ওদের মতো বন্ধু বান্ধব,হৈ হুল্লোর,পার্টি,ভ্রমন,এসব নিয়ে ব্যস্ত।


তাই নিজেকে নিজের মতো খুঁজে নিতে একটা জগত তৈরি করা।এখন নিজের মতো বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়া,পার্টি করা,ফেসবুক চালানো,একটু লেখা লেখির চেস্টা।সময় কেটে যায় নিরিবিলি, একলা দুপুর নিজের একান্ত আপন,স্বামী তার মতো নিজে নিজের মতো,কারো জন্য অপেক্ষা নেই কিছু সময় কাছে থাকার আগ্রহ নেই।ভালোই তো দিন যায়।

ছেলে মেয়েরা মাঝে মাঝে আসে ভালোই সময় কাটে।চলে গেলে মন খারাপ হয় তবু ভালো থাকার চেষ্টা করা।যেখানে যেতে ইচ্ছে হয় যাওয়া,হাত খরচের টাকা আর স্বামীর কাছে চাইতে হয়না,কৈফিয়ত ও দিতে হয়না।

আর তো কটা মাত্র দিন পড়ে আছে জীবনে তাইনা।নিজেকে সারা জীবন তো আর ঠকানো যায়না।
মর্নিংওয়াক,কিটো ডায়েট,ঘনঘন পার্লারে যাওয়া যদিও রূপের আকর্ষণ আর নেই তবুও মনের তৃপ্তি।শরীরচর্চা,মনের চর্চা সব করা।
কারণ এই সময় টাইতো পঞ্চাশ উর্ধ তরুণী হওয়ার।

চলুন না আমরা মনের বয়স বাড়তে না দিয়ে পঞ্চাশেই আবার না হয় নতুন করে যুবতি হয়ে যাই।
আমার কিন্ত পঞ্চাশ না

Facebook Comments Box

Posted ৫:১২ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শিক্ষার আলো ডট কম |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

Blooming Child – Shamsun Nahar Zeba

(607 বার পঠিত)

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
অফিস

চৌগাছা, যশোর-৭৪১০

হেল্প লাইনঃ 01644-037791

E-mail: shiksharalo.news@gmail.com